হাফিজুর রহমান শাহীন কুড়িগ্রামঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে রফিকুল ইসলাম (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে জবাই করে হত্যার পর গলাকাটা লাশ রাস্তার ধারের একটি বাঁশ ঝাড়ে রেখে গেছে দূর্বৃত্তরা । ঘটনাটি ঘটেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ি ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামে। উলিপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল ৬ টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর লাশ উদ্ধার করে । হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে সকালেই কুড়িগ্রাম থেকে সিআইডির একটি দল ঘটনা স্থলে পৌঁছে এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা প্রত্যক্ষ করে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন।
এদিকে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উলিপুর থানার এসআই মশিউর রহমান জবাই করে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। লোমহর্ষক এ হত্যা কান্ডের ঘটনায় এলাকার মানুষ জনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ একই গ্রামের প্রতিবেশী আলিফ উদ্দিনের পুত্র গরু ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম (৩৫)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। এছাড়া আলামত হিসেবে তার পড়নের একটি ভেজা প্যান্ট ও একজোড়া জুতা জব্দ করেছে ।
হত্যাকাণ্ডের শিকার রফিকুল ইসলাম ধরনী বাড়ি তেলিপাড়া গ্রামের আবুল হোসেন ফাগুর পুত্র। সে এক সময় বুট,বাদাম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত,পরে ভালো ভাবে জীবিকা নির্বাহের জন্য অটো চালাত। তার স্ত্রী লাইজু বেগম জানান, গত বৃহস্পতিবার আমরা স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে উলিপুর আশা অফিস থেকে ঋণপত্র স্বাক্ষর করে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করি। এরপর সন্ধ্যার দিকে দু’জনে অটোতে করে বাড়ি যাওয়ার পথে বাড়ির পাশে রাস্তায় স্ত্রী লাইজু বেগমকে নামিয়ে দিয়ে রফিকুল স্ত্রীকে বলেন, “তুমি বাড়ি যাও আমি একজনের কাছে টাকা পাবো মাঝবিল বাজারে যেতে হবে” এরপর আর তার সাথে কোন যোগাযোগ হয়নি। গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী বাসায় না ফেরায় লাইজু বেগম বেশ উৎকণ্ঠায় ছিলেন। তিনি বলেন, ঋণের ৫০ হাজার টাকা ছাড়াও তার স্বামীর কাছে কিছুদিন আগে তাদের অটো বিক্রির ৮০ হাজার টাকা ছিল। কি কারনে আমার স্বামীকে হত্যা করা হলো আমি কিছুই জানিনা, আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।
একটি সূত্রে জানা গেছে, মাঝবিল বাজার যাওয়ার পর রফিকুল তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও প্রতিবেশী ভাতিজা আলিপ উদ্দিনের পুত্র গরু ব্যবসায়ী রফিকুলকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়, পরবর্তীতে তারা দুজনে কোথায় গিয়েছে কি করেছে তা কারো জানা নেই।
এরপর গরু ব্যবসায়ী রফিকুল বাড়িতে আসলেও লাইজুর স্বামী অটো চালক রফিকুলের জবাই করা লাশ রাস্তায় পড়ে থাকে।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে উলিপুর থানা পুলিশের পাশাপাশি কুড়িগ্রাম সিআইডির একটি দল মাঠে কাজ শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।