সাইফ উদ্দীন আল-আজাদ,ক্রাইম রিপোর্টার,কুষ্টিয়া:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ১২টি স্বর্ণের বার উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন নীচপাড়া মাঠে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৪৭ বিজিবি) অভিযান চালিয়ে এক কোটি ১৯ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৪ টাকা মূল্যের ১২টি সোনার বার উদ্ধার করেছে।বাইসাইকেলের সিটের নিচে লোহার পাইপের ভেতর কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় এসব সোনা উদ্ধার করা হয়।
এর ওজন ১.৩৯৮ কেজি।বৃহস্পতিবার রাত ৯টার সময় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আরিফুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্বর্ণ চোরাচালান হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এসব সোনা উদ্ধার করা হয়। তবে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণের সাথে জড়িত কাউকে ঐদিন আটক করতে পারেনি বিজিবি।
বিজিবি সূত্র জানা যায়,স্বর্ণ চোরাচালানের গোপন সংবাদ পেয়ে ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল আরিফুল হক পিএসসি’র নির্দেশনায় ও উপ-অধিনায়ক মেজর মো. রকিবুল ইসলাম পিএসসি’র পরিকল্পনা ও তত্ববধানে রামকৃষ্ণপুর বিওপি’র টহল কমান্ডার নায়েব সুবেদার মো. ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে বিজিবি’র টহল দল ১৫৭ সীমান্ত পিলার হতে আনুমানিক ১৫০০গজ বাংলাদেশ অভ্যন্তরে নীচপাড়া মাঠ সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালায়।
বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে এক স্বর্ণ চোরাচালানকারী সাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে সাইকেলটি জব্দ ও তল্লাশী করে ১কেজি ৩৯৮ গ্রাম ওজনের উদ্ধার ১২টি স্বর্ণের বার (২৪টি খন্ড) উদ্ধার করে। উদ্ধার করা স্বর্ণের মূল্য ১ কোটি ১৯ লক্ষ ৮৩ হাজার ৫১৪ টাকা নির্ধারণ করে দৌলতপুর থানায় সাধারণ ডাইরী এবং উদ্ধার করা স্বর্ণ কুষ্টিয়া জেলা ট্রেজারীতে জমা দেয়। এদিকে স্বর্ণের বার উদ্ধারের ঘটনায় ওই এলাকার জনগণ জানান যে, সেদিন যে বাইসাইকেল থেকে স্বর্ণের বার গুলো উদ্ধার করা হয়েছিলো সেই সাইকেলের মালিক নিচ পাড়া এলাকার সাহাম্মদ আলীর ছেলে মহিবুল ইসলাম।
এবং ওই সাইকেলটা নিয়ে মহিবুল স্বর্ণ পাচার করার জন্য ইন্ডিয়া বর্ডারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এমন অবস্থায় বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে মহিবুল সাইকেল ফেলে পাট ক্ষেতের ভিতরে পালিয়ে যায়। অনুসন্ধানে আরও তথ্য বেরিয়ে আসে যে, ওই এলাকায় স্বর্ণ চোরাচালানের মূল হোতা ও উদ্ধার হওয়া স্বর্ণের বারের প্রকৃত মালিক আলিজানের দুই ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন ও মাসিদুল ইসলাম।এলাকাবাসির সূত্রে জানাযায়, দৌলতপুর থানার সবচেয়ে বড় মাদক জুটি নামে পরিচিত এই দুই ভাই। দৌলতপর থানা সহ দেশের বিভিন্ন থানায় এদের নামে মাদক মামলা রয়েছে। এরা গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, বিদেশি অস্ত্র সহ অবৈধ স্বর্নের বার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
বাংলাদেশে এই দুই মাদক জুটি ভাইদের অনেক বড় স্বর্নের ব্যবসার সিন্ডিকেট রয়েছে বলেও জানান এলাকাবাসী। এলাকাবাসী আরো জানান কয়েক বছর আগেও যাদের অবস্থা ছিল করুন তারা এখন সীমান্তবর্তী চর এলাকায় কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন শুধুমাত্র অবৈধ ব্যবসার কারণে।