কুড়িগ্রামের রৌমারীতে শিক্ষক পেটানোর নাটের গুরু আবু হোরায়রা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। ওইদিন তার নির্দেশেই পেটানো হয় প্রধান শিক্ষক নূরুন্নবীকে। অথচ তার বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের পদে তার নাম থাকায় সব দোষ থেকে তিনি মুক্তি পাচ্ছেন বলে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। শিক্ষক পেটানো সেই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর নেপথ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষা অফিসারদের মধ্যকার দ্বান্দ্বিক সম্পর্কের ইন্ধনদাতা আবু হোরায়রার বিরুদ্ধেও যথপোযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা। শিক্ষককে মারধরের ঘটনা মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হলে শনিবার রোকনুজ্জামানকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পদপদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নাটের গুরু আবু হোরায়রা কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন? রোকনুজ্জামান জানান, আমি সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রার কথামতো তাদের দুজনকে ধরে সিজি জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নিয়ে যাই। এ সময় প্রধান শিক্ষক নূরুন্নবী আমাকে দালাল বলায় সংযত থাকতে না পেরে তাকে চড়থাপ্পড় মেরেছি। এজন্য আবু হোরায়রা ভাই আমাকে গলা ধাক্কা ও জুতা দিয়ে পিটিয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মুটোফোনের কল রেকর্ড সিডিআর করলে তার প্রমাণ মিলবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা বলেন, আমার সামনে প্রধান শিক্ষক নূরুন্নবীকে মারধরের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে তাকে গলা ধাক্কা দিয়েছি। তবে তাকে জুতা পেটা করিনি। আমি এর আগে নূরুন্নবী সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাকে ঘিরে রোকন যে বক্তব্য দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুকতার হোসেন বলেন, আমার সঙ্গে তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় লিখিতভাবে জানিয়েছি। রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রূপ কুমার সরকার জানান, রোকনুজ্জামানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামি ধরার চেষ্টা চলছে। অপরদিকে সুপারভাইজারের লিখিতের কথা অস্বীকার করেন তিনি রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম সারোয়ার রাব্বি বলেন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুকতার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে থাকা উল্লিখিত ব্যক্তিদের ডাকা হয়েছে এবং তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যুগান্তর