শেখ সালমান আহমেদ, মধুখালী প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের মধুখালীতে পাটকল শ্রমিককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসির রায় ও প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২৪ জুলাই সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায় ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিুজর রহমান এ রায় দেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চুন্নু সিকদার (৩২), মো. নাজমুল হোসেন তেবেজ (৩৬), ইসলাম মীর (৩৬), নাছির খান নয়ন (৪৪) ও আতিয়ার মোল্যা (৪৬)। রায় ঘোষণার সময় সব আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে তাদের পুলিশ প্রহরায় জেল হাজতে পাঠানো হয়। আসামীদের প্রত্যেকের বাড়ি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ফরিদপুরে মধুখালী উপজেলার রাজধরপুর প্রাইড জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখে ওভারটাইম ডিউটি করে মিল থেকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বের হন তিনি। পথে নছিমন চালক চুন্নু সিকদার প্রথমে তাকে রাজধরপুর বাবু মিলিটারির কলাবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে ধর্ষণ করতে দেখে ফেলায় তেবেজ, ইসলাম মীর, আতিয়ার ও নাছিরও পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। শেষে এ ঘটনা ভিকটিম কাউকে বলে দিলে তাদের মানহানি হবে ভেবে সবাই মিলে তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে কলা বাগানে ফেলে রেখে যান। ঘটনার পরেরদিন সকালে স্থানীয়রা কলাবাগানে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। ১৬ অক্টোবর ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মুধখালী থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাহেব আলী ও সাইফুল আলম ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখে মোবাইলের কল লিস্ট যাচাই-বাছাই শেষে ওই পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ দেখে তাদের বিরুদ্ধে আনা অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এ জন্য আদালত প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার পাল বলেন, আসামিরা প্রত্যেকে নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে আসামি নয়ন ভিকটিমকে হত্যার পরেও ধর্ষণ করেছিলেন বলে জানান। আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৩) ধারাসহ ৩০২/৩৪ ধারায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। এতে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।