শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:০৭ অপরাহ্ন

মধুখালীতে পিতা কতৃক পুত্র খুন

রিপোর্টার নাম:
  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩
  • ৩৬৯ বার পঠিত:

 

শেখ সালমান আহমেদ, মধুখালী প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের মধুখালীতে আশাপুর আলিম মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মুরসালিনের হত্যাকারী ঘাতক মিজানুর রহমানের ফাঁসির দাবিতে আশাপুর আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডি, শিক্ষক – কর্মচারী, ছাত্র -ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন। ২৭ জুলাই ২০২৩, বৃহস্পতিবার সকাল ১০:০০ ঘটিকার সময় আশাপুর আলিম মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন আয়োজিত হয়। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও অনন্য সর্বস্তরের জনগণ শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের মাধ্যমে ঘাতক মিজানুর রহমানের সর্বচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি করেন। মধুখালীর চন্দনা বারাশিয়া নদী থেকে ৭০ টুকরা হাড় উদ্ধার করার পর তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। জানা যায় ১ বছর পূর্বে শিশু মুরসালিনকে হত্যা করার পর বস্তাবন্দী করে নদীতে ফেলে দেয় তার সৎ বাবা। ঠিক ১বছর পর নদীর পাড়ে শিশুরা খেলাধুলা করার সময় ফুটবল মনে করে পা দিয়ে আঘাত করতেই বেরিয়ে আসে মাথার খুলি। খবর পেয়ে মধুখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৭০ টি হাড় উদ্ধার করে। এরপর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ পিবিআই হত্যা রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি হত্যাকারী ঘাতক সৎ বাবাকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারের পর মুরসালিনকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দেন ঘাতক মিজানুর রহমান। ২৫ জুলাই ফরিদপুরের পিবিআই প্রধান প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। নিহত মুরসালিন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের আশাপুরের দরিদ্র শ্রমিক আশরাফুল শেখ ও ইতি খাতুন দম্পতির সন্তান। খোজ নিয়ে জানা যায় প্রথম স্বামী আশরাফুলের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হবার পর মিজানুর রহমানের (৩৫) সাথে বিবাহ হয় ইতির। মিজান ইতি দম্পতির ঘরে আরো একটি সন্তান রয়েছে। পিবিআই জানায় মিজান তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতো বিধায় গতবছর মুরসালিনকে তার নানার বাসায় রেখে ঢাকা চলে যায় ইতি খাতুন। এর দুদিন পর গতবছর ২৫ জুলাই মুরসালিন নিঁখোজ হয়। নিঁখোজের পর ইতি খাতুন মধুখালী থানায় জিডি করেন কিন্তু কোনো খোজ পাওয়া যায়নি মুরসালিনের। নিঁখোজের ৬ মাস পর গত বছরের ২৬ ডিসেম্বরে মধুখালীর গোন্দারদিয়া এলাকায় চন্দনা – বারাশিয়া নদীর তীরে মাথার খুলি ও প্লাস্টিকের বস্তায় মানুষের কংকাল দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয় স্থানীয় লোকজন। এ ঘটনায় মধুখালী থানার এসআই সৈয়দ তোফাজ্বেল হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। থানা পুলিশ দীর্ঘদিন তদন্ত করার পরেও কোনো সন্তোষজনক ফলাফল না পাওয়ায় মামলার ভার পিবিআইয়ের উপর পরে। ফরিদপুরের পিবিআই প্রধান আবুল কালাম আজাদ মামলার তদন্তের ভার দেন এসআই রামপ্রসাদ ঘোষকে। এসআই রামপ্রসাদ ঘোষ জানান নিহত মুরসালিনের জিডির সুত্র ধরে তার পিতা মাতাকে ডিএনএ টেস্টের জন্য ল্যাবে পাঠানো হয় অতঃপর পরিচয় মেলে মুরসালিনের। এরপর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য পিবিআই একটি টিম গঠন করে। গত ২৩ জুলাই ২০২৩ রবিবার রাতে মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার ওয়াপদা মোড় থেকে মিজানকে গ্রেফতার করা হয়। ২৪ জুলাই দুপুরে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন মিজানুর রহমান। মিজান জানায়, ঘটনার দিন সকালে মরিচের ক্ষেতে কাজ করছিলেন তিনি। এসময় মুরসালিনকে ঘর থেকে বের হতে দেখে তাকে ডেকে নিয়ে তার মা কোথায় গেছে তা জানতে চান। তখন প্রশ্নের কোনো উত্তর না পেয়ে মুরসালিনের কানে সজোরে থাপ্পর মারেন তিনি। থাপ্পরের তীব্রতায় মুরসালিনের কানের পর্দা ফেটে রক্তাক্ত মুরসালিন মাটিতে লুটিয়ে পরে এবং ঘটনাস্থলে মারা যায়। এরপর রাস্তার পাশের বড় ঘাসের মধ্যে মুরসালিনের লাশ লুকিয়ে রাখেন তিনি। রাতে ঘর থেকে প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে মুরসালিনের লাশ বস্তাবন্দী করে চার কিলোমিটার দুরে নদীর পারে চাপা দেয় ঘাতক মিজান। মানববন্ধনে উপস্থিত সকলেই একযোগে ঘাতক মিজানের কঠোর শাস্তির দাবি করেন। এসময় মানববন্ধনকারীরা ক্লুলেছ হত্যা মামলার সঠিক রহস্য উদঘাটনের জন্য ফরিদপুরের পিবিআই পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদকে ধন্যবাদ জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই রকম আরো সংবাদ

© All rights reserved © 2022  A2zbarta.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com