লিটন সরকার, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা মাসিক সভায় ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী অফিসার) অমিত চক্রবর্তী ও উপজেলার ৩নং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের চরম উত্তেজনা পরিস্থিতির কারনে উপজেলা মাসিক সভা পন্ড হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
টিআর কাবিখা প্রকল্প ভাগবন্টন ও বাস্তবায়ন এবং ইউএনও অফিস না করে বাস ভবনে বিভিন্ন ফাইলে স্বাক্ষর করার ঘটনা নিয়ে ইউএনও চেয়ারম্যানরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে ওই উত্তেজনাকার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারী) উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ওই ঘটনা ঘটে।
মাসিক সভায় ওই পরিস্থিতি নিয়ে কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হুমায়ুন কবির ছক্কু সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ইউএনও সাহেব মাসিক সভায় সবার উপস্থিতিতে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি হজ্ব করে আসছেন। হজ্ব কইরা কি হয়।’ তিনি আমাকে এবং আমার আরো দুই চেয়ারম্যানের সঙ্গে চরম খারাপ আচরন করেন। গালিগালাজ করেন। এমনকি ইউএনও সাহেব তার চেয়ার থেকে উঠে আমাকে মারার জন্য তেড়ে আসার চেষ্টা করেন। আমাকে মাসিক সভা থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। একই ধরণের অভিযোগ করেন, রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিরন মো.ইলিয়াস ও মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করেন, টিআর কাবিখাসহ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মসূচীতে ইউএনও স্বেচ্ছাচারিতা করেন। তিনি অফিস না করে বাস ভবনে উন্নয়ন কর্মকান্ডের সকল ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এলাকার সাধারণ মানুষ ইউএনও’র সঙ্গে দেখা করতে এসে তাকে অফিসে না পেয়ে ফেরত যায়। শেখ হাসিনার গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্বমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের সকল দপ্তরে সরকারি কর্মকর্তারা নিয়মিত অফিস করেন না। মাসিক সভায় এ বিষয়গুলো চেয়ারম্যানরা তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গেই ইউএনও’র সঙ্গে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে।
মাসিক সভায় উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সরকার। তিনি জানান, ইউএনও সাহেব চেয়ারম্যানদের সঙ্গে খবুই খারাপ আচরণ করেছেন। হজ্ব ও হাজি নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা ইউএনও’কে থামানোর অনেক চেষ্টা করেছি তারপরও তিনি উত্তেজিত হয়েছেন। উত্তেজনার এক পর্যায়ে ইউএনও সাহেব সভা থেকে কাউকে কিছু না বলে বের হয়ে হয়ে যান। পরে আর ফেরত আসেননি। পরে সভা আর হয়নি।
মাসিক সভার সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ইউএনও সাহেব কাজটি মোটেও ঠিক করেননি। সভা থেকে ইউএনও সাহেব বের হয়ে যাওয়ার অনেক পরে সভার স্থগিত করা হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউএনও অমিত চক্রবর্তী বলেন, ‘হজ্ব কইরা কি হয়-এ কথাটি আমি বলি নাই। এটি চেয়ারম্যানের মনগড়া কথা।’ চেয়ারম্যানরা আমার সঙ্গে কোনো সমন্বয় করেন না। তাদের ডেকে ও চিঠি দিয়েও অফিসে হাজির করতে পারি না। ফলে সরকারের উন্নয়ন মূলক বিভিন্ন কর্মসূচী সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এই বিষয়গুলো মাসিক সভায় তুলে ধরলে কোদালকাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।