শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

রাত পোহালেই ভোট বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে

রিপোর্টার নাম:
  • আপডেট সময় : রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩
  • ৬৭ বার পঠিত:

মোঃ রাসেল হোসেন,ভোলা জেলা প্রতিনিধি:

রাত পোহালেই ভোট বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে। গতকাল শনিবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার। গতকাল প্রচারের শেষ দিনে স্লোগান আর মাইকের আওয়াজে কানে তালা লাগার মতো অবস্থা ছিল নগরজুড়ে। মেয়র পদ প্রার্থীরা ও কাউন্সিলর পদ প্রার্থীরা যার যার প্রচারনা ব্যাস্ত ছিলো গত ২৬ মে প্রতীক পাওয়ার পর থেকে এতদিন এই প্রচারণা শেষ করে নির্বাচনের দারপ্রান্তে সকল প্রার্থীগন।
এইদিকে নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারীরা। মাঠপর্যায়ের অনেক নেতা-কর্মীর ধারণা, দলীয় কোন্দলে বরিশালেও হতে পারে গাজীপুরের চিত্র।

আমরা বিশ্বাস করি এবং সেভাবেই সমন্বয় করছি, সবাই দলের প্রার্থীর জেতার জন্য মাঠে নেমেছে এবং নৌকা জিতবেই।’

এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে লোকজনকে ভোট দিতে যেতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মীর জাহিদ বলেন, ‘আমরা দলগতভাবে ভোটারদের ভোট দিতে না যাওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা এবং রাজনীতিসচেতন কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরিশাল বিভাগে আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই ও বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর হাতে। তাঁর বাহিরে এখানে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি চিন্তা করা কঠিন। তাঁর ছেলে বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে বাদ দিয়ে ভাই খোকন সেরনিয়াবাতকে মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে সংকট এখনো কাটেনি। বারবার দলগতভাবে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিলেও হাসানাত আবদুল্লাহর অনুসারীরা কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে দলের মধ্যেই।

নৌকার মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়ায় বরিশালে আর ফেরেননি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। তাঁর চাচা খোকন সেরনিয়াবাত মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে অভিযোগ করে আসছেন, দলের একটি অংশ এখনো তার পাশে এসে দাঁড়ায়নি। আবার খোকন অনুসারীরা সাদিককে প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছেন। এরপর এলাকায় না ফিরেও নগরে ৩০টি ওয়ার্ডের অন্তত ২০টিতে কাউন্সিলর পদে নিজের প্রার্থী দিয়েছেন সাদিক আবদুল্লাহ। এই প্রার্থীদের নিয়েই এখন যত চিন্তা নৌকার।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বরিশাল সিটি নির্বাচন উপলক্ষে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান অবশ্য দাবি করে বলেন, দলে দ্বিধাবিভক্তির জায়গা নেই। যেটুকু ছিল, তা নিরসন হয়েছে, সবাই ঐক্যবদ্ধ।

নগরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ও যুবলীগ নেতা মোঃ শামিম বলেন, তাঁর ওয়ার্ডে রউফুল আলম নোমান প্রার্থী হয়েছেন হাসানাত পরিবারের ইশারায়। এখন নৌকার ব্যাজ পরে তাঁর কর্মীরা হাতপাখায় ভোট দেন কি না, সেটাই তাঁদের চিন্তা।

নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মঈন তুষার বলেন, ‘সাদিকের লোকজন কখনো হাতপাখার উপর, কখনো লাঙ্গলের উপর ভর করে। আমরা মাঠপর্যায়ে এমন অভিযোগ পাচ্ছি। দলের একটা অংশ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এতে অবশ্যই দলে ভীতি আছে।’

গতকাল নগরের গ্র্যান্ড পার্ক হোটেলে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত বর্তমান তিন সংরক্ষিত কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন খোকন সেরনিয়াবাত। বৈঠক থেকে বেরিয়ে কাউন্সিলর সেলিনা বেগম বলেন, ‘খায়ের ভাই কথা বলতে ডেকেছিলেন, তাই এসেছিলাম।’ কী কথা হলো, তা তিনি বলতে চাননি।

আবার মেয়র পদে লাঙ্গলের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসের পক্ষে মাঠে আছেন তাঁর ভাই বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) যুবদলের সভাপতি এইচ এম তসলিম উদ্দিন।সাদিক অনুসারী ও নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজী নইমুল হোসেন লিটু বলেন, ‘সাবেক মেয়র হিরণ ভাইয়ের সময়ে যাঁরা নির্বাচন পরিচালনা করছেন, তাঁরাই এখন নৌকার প্রার্থীর পাশে আছেন। বিএনপি যেহেতু নির্বাচন করছে না, তাই বিএনপির কাউন্সিলরদের লোকজন আমাদেরই ভোট দেবে। সাদিকের মতো খোকন ভাইয়ের লোকও তো কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন।’

নগর বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক তারিন বলেন, ‘সিটিতে বিএনপির ভোট প্রায় ৬৫ শতাংশ। এর মধ্যে একাংশ আমরা ভোট দিতে যাব না। কিন্তু বিএনপির সাধারণ সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাবেন কাউন্সিলররা।’
তবে দেখার বিষয় নির্বাচন শেষে কে বিজয় হয়, কে শেষ হাসি হাসে, কার হাতে উঠবে আগামীর বরিশাল।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই রকম আরো সংবাদ

© All rights reserved © 2022  A2zbarta.Com
Design & Development BY Hostitbd.Com